এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের গেইট ইজারাদার নিয়োগে অনিয়মের ঘটনায় বর্তমানে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। টেন্ডার মুল্যায়ন কমিটির সংশ্লিষ্টরা মোটা অঙ্কের উৎকোচ হাতিয়ে নিয়ে সর্বোচ্চ ডাককারী প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা অপর একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ইজারাদার নিয়োগ দিতে পায়ঁতারা চালাচ্ছেন। এ অবস্থার কারনে বর্তমানে গেইটের ইজারা ডাককারী দুইটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ তুলেছেন, পার্কের বিবদমান ঘটনার সুরাহা না হলে যে কোন মুর্হুতে গেইট ইজারাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে একদিকে আইনশৃঙ্খলার যেমন অবনতি ঘটবে, তেমনি এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে রোজার ঈদে পার্কে দশনার্থী আগমনে।
সুত্রে জানা গেছে, বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তার দপ্তর থেকে আগামী অর্থবছরের জন্য ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের গেইট ইজারা নিয়ে পঞ্চম বারের মতো দরপত্র আহবান করা হয়। গত ৫ মে চট্টগ্রামে সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক কার্যালয়ে দরপত্র দাখিলের শেষ দিনে ইজারা নিতে ইচ্ছুক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমুহ তাদের ফরম দাখিল করেন।
অংশগ্রহনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চকরিয়া উপজেলার সজিব কনষ্ট্রাকশন ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে বিবেচিত। ৮৫ লাখ টাকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন অপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিজভী কনষ্ট্রাকশন।
অভিযোগ উঠেছে, গেইট ইজারা প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত মুল্যায়ন কমিটির সংশ্লিষ্টরা অন্তত ৫ লাখ টাকার বেশি উৎকোচ হাতিয়ে নিয়ে সর্বোচ্চ ৯৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার দরদাতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে গেইট ইজারা না দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ৮৫ লক্ষ টাকায় গেইট ইজারা দিতে পায়তারা শুরু করছেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ ধরণের অভিযোগ তুলেছেন সর্বোচ্চ দরদাতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সজিব কনষ্ট্রাকশন। এতে আগামী অর্থবছরের জন্য সাফারি পার্কের গেইট ইজারা খাতে সরকারের অন্তত ১০ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরকারের ১০ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হলেও নিজের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ। তিনি চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘পার্কের গেইট ইজারা এমন প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়, যে প্রতিষ্ঠানের সকল ধরণের কাগজপত্র সঠিক এবং অভিজ্ঞতা থাকবে। এ কারণে কোটি টাকা দর দিলেও অনভিজ্ঞ কোন প্রতিষ্ঠানকে গেইট ইজারা দেওয়া সম্ভব নয়।’
অপরদিকে সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে বিবেচিত হবার পরও কৌশলে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা অপর একটি প্রতিষ্ঠানকে সাফারি পার্কের গেইট ইজারা দিতে অপচেষ্ঠার এ ঘটনায় শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্থ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সজিব কনষ্ট্রাকশনের মালিক চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘আমার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কাজ করে আসছে। এখানে অভিজ্ঞতার অজুহাত তুলে সংশ্লিষ্টরা মূলত মোটা অংকের টাকা ঘুঁষ-বাণিজ্য করে বিএনপি-জামায়াত ঘরনার সিন্ডিকেটের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কমমূল্যে সাফারি পার্কের গেইট ইজারা দেওয়ার পায়তারা করছেন। এনিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
তিনি বলেন, এরপরও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে শুরু করা অপর্কমটি বন্ধ না করলে আমি উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেব। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। #
পাঠকের মতামত: